1. admin@dainikprottasha.com : admin :
  2. : notesprofile :
ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে ক্ষতিগ্রস্ত লিভার-কিডনি - দৈনিক প্রত্যাশা
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ১১:৫২ অপরাহ্ন

আপনার প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞাপন দিতে যোগাযোগ করুনঃ+৮৮০১৭৪৪-৮৯৬৫৮৮

ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে ক্ষতিগ্রস্ত লিভার-কিডনি

  • প্রকাশিত: শুক্রবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৪
  • ৪০২ বার শেয়ার হয়েছে

চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অথবা নিজে ফার্মেসি থেকে কিনে অনেকেই শরীরের রোগ ভালো করার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়া শুরু করে। ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া, অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স পূরণ না করা বা ছোটখাটো শারীরিক সমস্যার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার প্রবণতা মানুষের মধ্যেও প্রবল। তবে সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হলো এসব অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের পুরো কোর্স সম্পন্ন না করেই রোগীরা ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেয়। অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই শরীর থেকে রোগ মুক্তি ঘটে। অ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধের ভুল এবং অসচেতন ব্যবহারের কারণে বিশ্বব্যাপী নিউমোনিয়া, যক্ষ্মার মতো রোগের চিকিৎসা প্রক্রিয়া ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অ্যান্টিবায়োটিকের ভুল এবং অসচেতন ব্যবহারের কারণে জাতীয় ওষুধ কার্যকারিতা হারাচ্ছে আশঙ্কাজনক হারে।

চিকিৎসকরা বলছেন, রোগীর রোগ মুক্তি হয়ে যাওয়ার পরও অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের পুরো কোর্স পর্যন্ত ওষুধ খেয়ে যাওয়া উচিত। নয়তো শরীরে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে জন্ম নেয় ব্যাকটেরিয়া।

যেভাবে বাড়ে জীবাণুর ক্ষমতা

জীবাণু মেরে ফেলার জন্যই আমরা অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ করি। কিন্তু এতে কোনো অনিয়ম হলে কিছু জীবাণু বেঁচে যায়। ওই অ্যান্টিবায়োটিকটিকে তারা চিনে রাখে, অ্যান্টিবায়োটিককে প্রতিহত করতে নিজেদের জিনগত পরিবর্তন করে, এতে করে জীবাণুটির পরবর্তী প্রজন্ম হয়ে ওঠে অ্যান্টিবায়োটিকপ্রতিরোধী। অথচ নিয়ম মেনে ওষুধটি খেলে বাকি জীবাণুগুলোও মরে যেত, ক্ষমতাসম্পন্ন প্রজন্মেরও আর জন্ম হতো না। অন্যদিকে অপ্রয়োজনে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে দেহের উপকারি জীবাণুগুলোও হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক ক্ষতিকর। হয়ে যেতে পারে মাল্টি ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (অনেক অ্যান্টিবায়োটিকপ্রতিরোধী), এক্সট্রিম ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (অল্প কিছু মূল্যবান অ্যান্টিবায়োটিক ছাড়া অন্য অ্যান্টিবায়োটিক কাজ করে না) কিংবা প্যান ড্রাগ রেজিস্ট্যান্স (কোনো একটি অ্যান্টিবায়োটিক এককভাবে আর কার্যকর হয় না) যিনি ধরনের মারাত্মক জীবাণুর দ্বারা সংক্রমিত, তার কাছ থেকে জীবাণু এমন কারও মধ্যেও ছড়িয়ে পড়তে পারে, যিনি হয়তো অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে কখনোই অনিয়ম করেননি।

কোন বিপদ

সব অ্যান্টিবায়োটিক সব জীবাণুর জন্য নয়। শক্তিশালী অ্যান্টিবায়োটিকগুলোকে সংরক্ষিত রাখা হয় মারাত্মক সংক্রমণের জন্য। কিন্তু অ্যান্টিবায়োটিকপ্রতিরোধী জীবাণুর নতুন নতুন প্রজন্ম এমন পর্যায়ে চলে যাচ্ছে যে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে থাকা রোগীর জন্যও কার্যকর অ্যান্টিবায়োটিক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর হয়ে পড়ছে। অন্য অনেক রোগীর জন্যও শক্তিশালী একাধিক অ্যান্টিবায়োটিকের সমন্বয় ব্যবহার করতে হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে তাতেও সংক্রমণ পুরোপুরি সারছে না। এসব বাড়তি অ্যান্টিবায়োটিকের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও আছে, ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে লিভার বা কিডনি। আবার সংক্রমণ মারাত্মক আকার ধারণ করার কারণেও জীবনসংশয়ে পড়ছেন রোগী। এসব মারাত্মক জীবাণুর বিরুদ্ধে কার্যকর হবে, এমন অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবনও হচ্ছে না। এমনটা চলতে থাকলে সামনের দিনগুলো হয়ে উঠতে পারে আরও ভয়াবহ। ব্যাকটেরিয়া তো বটেই, ছত্রাক সংক্রমণের ক্ষেত্রেও ভুলভাবে অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ প্রয়োগের ফলে তৈরি হচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিকপ্রতিরোধী ছত্রাকের প্রজন্ম।

এখনি সচেতন হোন

ইচ্ছেমতো অ্যান্টিবায়োটিকজাতীয় ওষুধ খাবেন না। নিবন্ধিত চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া যাবে না। ওষুধ বিক্রেতারাও অনেক ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার পরামর্শ দেন। ব্যবস্থাপত্র ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিকজাতীয় ওষুধ ক্রয়বিক্রয় করা যাবে না।

প্রয়োজন মনে করলে চিকিৎসক আপনার রোগের জন্য দায়ী জীবাণুটিকে চিহ্নিত করতে কালচার পরীক্ষা দেবেন। কালচার পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে সময় লাগে। ধৈর্য ধারণ করতে হবে। সরকারিভাবে সারা দেশে কালচার পরীক্ষার সুবিধা চালু করাও প্রয়োজন। অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শমাফিক নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধান মেনে চলুন। উপসর্গ প্রশমিত হলেও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত অ্যান্টিবায়োটিক চালিয়ে যেতে হবে।

করণীয়

>>> শুধু রেজিস্টার্ড চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হবে।

>>> চিকিৎসককে অ্যান্টিবায়োটিক প্রেসক্রিপশন করার জন্য চাপ প্রয়োগ করা যাবে না।

>>> ওষুধের মাত্রা সেবনকাল মেনে চলতে হবে।

>>> একজনের বেঁচে যাওয়া বা অতিরিক্ত অ্যান্টিবায়োটিক চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অন্যজন সেবন করবে না (রোগের লক্ষণ এক হলেও)

>>> সংক্রমণ প্রতিরোধে পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা।

>>> যেসব প্রতিষ্ঠানে অ্যান্টিবায়োটিকসমৃদ্ধ মাছের খাবার, পোল্ট্রি ফিড ব্যবহার করা হয়, তাদের বর্জন করা।

>>> শুধু সঠিকভাবে রোগ নির্ণয়ের পরই সঠিক মাত্রায় প্রয়োজনীয় জীবাণুরোধক ওষুধ প্রদান করতে হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরো সংবাদ পড়ুন
কারিগরি সহযোগিতায়: জাগো হোষ্টার বিডি