নিজস্ব সংবাদদাতা
রংপুরের কেশবপুর পূর্বপাড়ায় জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনার জের ধরে বড় ভাইয়ের হুকুমে ভাতিজা কর্তৃক চাচাকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় থানায় মামলা হলেও আসামিরা এখনো পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। উল্টো মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আসামি ও তার ভাড়াটিয়া লোকজনের বিরুদ্ধে। ফলে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আজাদ ও তার পরিবারের লোকজন।
ঘটনার বিবরণ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, রংপুর সদর উপজেলার ৪নং সদ্যপুষ্করিনী ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডধীন কেশবপুর পূর্ব পাড়া গ্রামে জমিজমা সংক্রান্ত ঘটনার জের ধরে মৃত- মমতাজ উদ্দিনের ছোট ছেলে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী আজাদ হোসেনের সাথে বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন বাবুর দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। উক্ত দ্বন্দকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন থেকে বড় ভাই বাবু ও তার লোকজন কর্তৃক ছোট ভাই আজাদ ও তার পরিবারের লোকজনকে প্রায় সময় বিভিন্ন ধরনের ভয় ভীতি হুমকি প্রদানসহ ক্ষতিসাধনের চেষ্টায় লিপ্ত থাকে।
এমতাবস্থায় ঘটনার দিন গত ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং সকাল অনুমান নয়টার দিকে আজাদ হোসেন ব্যবসায়িক কাজে বের হয়ে বাড়ির সামনে বের হওয়া মাত্রই পূর্ব পরিকল্পনা মোতাবেক হাতে ধারালো ছুরি, লোহার রড, লাঠিসোঁটা নিয়ে বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন বাবু, ভাতিজা সোহেল রানাসহ তাদের পরিবারের লোকজন আজাদ হোসেনের পথ রোধ করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন। এতে বাধা নিষেধ করলে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে বড় ভাই দেলোয়ার হোসেন বাবুর হুকুমে ভাতিজা সোহেল রানা চাচা আজাদ হোসেনকে ধারালো ছুরি দিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যা চেষ্টা চালায়। এ সময় আজাদের মাথার মধ্যখানে গুরুতর কাটা রক্তাক্ত জখম হয়। পরে মাটিতে পড়ে গেলে আজাদের সাথে থাকা কাপড়ের ব্যাগে ব্যবসার সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায় হত্যা চেষ্টাকারীরা। এ সময় ব্যবসায়ী আজাদের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশের সহযোগিতায় উদ্ধার করে আশংকাজনক অবস্থায় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। এদিকে আজাদকে উদ্ধার করেন হাসপাতালে পাঠানোর পর বাবু ও তার লোকজন ফিল্মি স্টাইলে আজাদের জমিতে অনধিকার প্রবেশ করে জমিতে থাকা ফলজ/বনজ ৯টি বড় গাছ, ফসলাদি, জমির টাটি-বেড়া, ঘিরা কেটে প্রায় দেড় লক্ষাধিক টাকার ক্ষতিসাধন করেন।
এ ঘটনায় আজাদ হোসেন বাদী হয়ে গত ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ ইং রংপুর সদর কোতোয়ালী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং ১৪।
এদিকে মামলা দায়ের’র পর আসামিরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। বর্তমানে মামলা তুলে নিতে বাদী ও তার পরিবারের লোকজনকে বিভিন্ন ধরনের হুমকি-ধুমকি দেওয়া হচ্ছে। ফলে বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আজাদ হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন। যে কোন সময় তার ও তার পরিবারের উপর হামলার আশঙ্কা করছেন আজাদ হোসেন। তিনি ন্যায় বিচারের স্বার্থে আইন প্রয়োগকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার আশু হস্তক্ষেপ কামনা করে তার জান-মালের নিরাপত্তা চেয়েছেন । পাশাপাশি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবী জানিয়েছেন ।
এ বিষয়ে রংপুর কোতয়ালী থানার অফিসার্স ইনচার্জ অলিভ মাহমুদ সাংবাদিকদের জানান, আজাদ হোসেনকে হত্যা চেষ্টা ও টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনায় ইতিমধ্যে মামলা রুজু করা হয়েছে। আসামীদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান রয়েছে। যে কোন সময় তারা পুলিশের হাতে আটক হবে। এছাড়াও এমসি হাতে পেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আদালতে চার্জশিট জমা দেয়া হবে।
24sv28