রতন রায় : কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
কুড়িগ্রাম জেলায় রাজারহাট উপজেলার গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজের (এলএসডি) প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এ জেলার প্রতিটি উপজেলার প্রায় প্রতিটি গ্রামের খামার ও গৃহস্থের গরুতে দেখা দিয়েছে এ রোগ। এতে করে গরু মারা যাওয়ারও ঘটনা ঘটছে। তবে এর নির্দিষ্ট কোনো তথ্য নেই জেলা-উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরে।
কিন্তু গ্রাম্য পশু চিকিৎসকদের দাবি, গত তিন মাসে অন্তত ৫০০শতাধিক বেশি গরু মারা গেছে। এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন গৃহস্থ ও খামারিরা।
সকল উপজেলার একাধিক গ্রাম্য পশু চিকিৎসক, গৃহস্থ ও খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত বছর একই সময়ে গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজ দেখা দিয়েছিল। চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে আবারও এ রোগে গরু আক্রান্ত হতে শুরু করে। এখন প্রতিটি গ্রামে গ্রামে গরুর লাম্পি স্কিন ছড়িয়ে পড়েছে।
গ্রাম্য চিকিৎসকরা প্রতিদিন ভোর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত আক্রান্ত গরুর সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। গৃহস্থ ও খামারিরা আক্রান্ত গরুকে প্রাণিসম্পদ দপ্তরে নিয়ে চিকিৎসা করাচ্ছেন। এদিকে মারা যাওয়া বেশিরভাগই বিদেশি জাতের বাছুর।
প্রাণিসম্পদ দপ্তর থেকে প্রতিষেধক হিসেবে আক্রান্ত গরুকে ছাগলের পক্স ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। এতে তেমন একটা কাজ করছে না বলে জানান খামারিরা। তবে বাজারে গরুর ভ্যাকসিন পাওয়া যাচ্ছে। সরবরাহের কম অজুহাতে দাম বেশি নেওয়া হচ্ছে।
এলএসডি আক্রান্ত গরু প্রথমে জ্বরে আক্রান্ত হয় এবং খাবার রুচি কমে যায়। জ্বরের সাথে সাথে নাক-মুখ দিয়ে লালা বের হয়, পা ফুলে যায়, দুই পায়ের মাঝে পানি জমে যায়। পশুর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চামড়া পিণ্ড আকৃতি ধারণ করে, লোম উঠে যায় এবং ক্ষত সৃষ্টি হয়। আর এ ক্ষত শরীরের অন্যান্য জায়গায় দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষতস্থান থেকে রক্তপাত হতে পারে। শরীরের কোথাও কোথাও ফুলে যায়।
রাজারহাট উপজেলার সদর দেবীচরণ গ্রামের খামার অমুল্য চন্দ্র রায় বলেন, আমার খামারে ৫ মাস বয়সী বিদেশি জাতের একটি বাছুর গরু লাম্পি স্কিন ডিজিজে আক্রান্ত হয়ে গত কাল মারা যায় ।
একই উপজেলা একই গ্রামের রতন রায় এর -খামারে ফ্রিজিয়ান জাতের গরুর বাছুর অসুস্থ অবস্থা আছে তবে বাচুটি কিছু খাচ্ছে না। আজ সকালে মারা যায়।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার শহিদুল ইসলাম বলেন, ছোটবড় মিলে নয়টি গরু পালন করি। এরমধ্যে তিনটি লাম্পি স্কিন রোগে আক্রান্ত হয়েছে। দুটি বাছুর ও একটি বড় গরু। গরুগুলো খেতে পারছে না। শরীরে খুব জ্বর, পা ফুলে গেছে। আরও কয়েকটা গরুর জ্বর শুরু হতেই হাসপাতালে গিয়ে ওষুধ নিয়ে এসেছি। সব গরুকে ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছে। অনেকটা সুস্থ হচ্ছে গরু।
Leave a Reply